Google Sheets হলো একটি ফ্রি, ক্লাউড-ভিত্তিক স্প্রেডশিট অ্যাপ্লিকেশন, যা Google দ্বারা সরবরাহ করা হয়। এটি Microsoft Excel-এর মতোই কাজ করে, তবে অনলাইনে হওয়ায় এটি রিয়েল-টাইম কোলাবোরেশনের জন্য আদর্শ। এখানে ব্যবহারকারীরা সহজেই ডেটা এন্ট্রি, ফর্মুলা ব্যবহার, ডেটা এনালাইসিস, চার্ট তৈরি এবং ফাইল শেয়ার করতে পারে। Google Sheets-এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- রিয়েল-টাইম কোলাবোরেশন
- ডেটা ফিল্টারিং এবং সোর্টিং
- স্বয়ংক্রিয় সংরক্ষণ
- শেয়ারিং ও পারমিশন কন্ট্রোল
- ফর্মুলা এবং ফাংশন ব্যবহার
- চার্ট ও গ্রাফ তৈরি
- অ্যাডভান্সড অটোমেশন এবং কাস্টমাইজেশনের জন্য Apps Script
Google Sheets যে কোনো ডিভাইস থেকে অ্যাক্সেসযোগ্য এবং ইন্টারনেট থাকলেই সহজে ব্যবহার করা যায়।
🔺
Data Entry: কাস্টমার তথ্য, প্রোডাক্ট লিস্ট, অ্যাটেনডেন্স বা যেকোনো টেবুলার ডেটা ইনপুট করার জন্য Google Sheets খুবই কার্যকর।
Formulas: Google Sheets-এ সহজে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ সহ বিভিন্ন গাণিতিক অপারেশন করা যায়, যেমন
=SUM()
,=AVERAGE()
,=COUNT()
।Cell Formatting: ভিজুয়াল ক্ল্যারিটি বাড়াতে সেল, টেক্সট, এবং ডেটার জন্য বিভিন্ন ফরম্যাটিং অপশন ব্যবহার করা যায়, যেমন বোল্ড, কালারিং, এবং বর্ডার দেওয়া।
Conditional Formatting: নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেল হাইলাইট করা যায়, যেমন একটি সংখ্যা ১০০-এর বেশি হলে সেল লাল হয়ে যাবে।
Data Sorting & Filtering: একাধিক কলামের ডেটা সহজেই ছোট থেকে বড় বা বড় থেকে ছোট ক্রমে সাজানো যায়। ডেটা ফিল্টার করে নির্দিষ্ট তথ্য দেখা যায়।
Data Validation: নির্দিষ্ট ধরনের ইনপুট যেমন, সংখ্যা বা ডেট শুধুমাত্র ইনপুট দেওয়ার জন্য Data Validation ব্যবহার করা যায়।
Charts and Graphs: ডেটা ভিজুয়ালাইজেশনের জন্য Pie, Bar, Line সহ বিভিন্ন ধরনের চার্ট তৈরি করা যায়।
Freeze Rows/Columns: উপরের রো বা বামদিকের কলামগুলো ফ্রিজ করা যায় যাতে স্ক্রল করলে তারা স্থির থাকে।
Pivot Tables: বড় ডেটা সেট থেকে ইনসাইট বের করতে Pivot Table ব্যবহার করা যায় যা দ্রুত এবং সহজে ডেটা এনালাইসিস করতে সাহায্য করে।
Collaboration: একই Google Sheets ফাইল একাধিক ব্যবহারকারী একসাথে এডিট করতে পারে, যা রিয়েল-টাইম কোলাবোরেশনের জন্য উপযোগী।
Sharing Permissions: ফাইল শেয়ার করতে চাইলে ভিন্ন ভিন্ন লোককে View, Comment, বা Edit পারমিশন দেওয়া যায়।
Version History: ডেটা পরিবর্তনের আগে-পরে দেখা এবং প্রয়োজন হলে পুরনো ভার্সনে ফিরে যাওয়া যায়।
IF Function: IF ফাংশন দিয়ে শর্তাধীন ফলাফল তৈরি করা যায়, যেমন
=IF(A1>10, "High", "Low")
।Array Formulas: একাধিক সেলে একসাথে ফাংশন প্রয়োগ করা যায়, যেমন
=ARRAYFORMULA(A1:A10 + B1:B10)
।Importing Data: বিভিন্ন সোর্স থেকে যেমন CSV ফাইল, Excel ফাইল, বা অনলাইন থেকে ডেটা ইম্পোর্ট করা যায়।
Google Forms Integration: Google Forms দিয়ে ইনপুট নিলে সেই ডেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে Google Sheets-এ যোগ করা হয়।
Add-ons: Google Sheets-এর ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন Add-ons ব্যবহার করা যায়, যেমন Mail Merge, Data Analysis Tools ইত্যাদি।
Data Protection: নির্দিষ্ট রেঞ্জ বা শীট লক করে অন্যদের পরিবর্তন করার অনুমতি না দিয়ে ডেটা প্রটেক্ট করা যায়।
Query Function: SQL-এর মতো ফাংশন দিয়ে ডেটার ওপর জটিল কুয়েরি করা যায়, যেমন
=QUERY(A1:D10, "SELECT A, B WHERE C > 10")
।Script Editor: অ্যাডভান্সড অটোমেশন ও কাস্টমাইজেশনের জন্য Apps Script ব্যবহার করা যায় যা Google Sheets-এ জটিল কাজ স্বয়ংক্রিয় করতে সাহায্য করে।
এই বেসিক ফিচারগুলো ব্যবহার করে আপনি Google Sheets-এ অনেক কিছুই সহজেই করতে পারবেন।
🔺
Excel এবং Google Sheets এর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে, যেগুলো ব্যবহারকারীর চাহিদা ও কাজের ধরণের ওপর নির্ভর করে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। নিচে তাদের প্রধান পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো:
১. প্ল্যাটফর্ম
- Excel: Microsoft Excel একটি ডেস্কটপ-বেসড অ্যাপ্লিকেশন। যদিও Excel-এর অনলাইন ভার্সনও আছে, তবে বেশিরভাগ ফিচার ডেস্কটপ ভার্সনে পাওয়া যায়।
- Google Sheets: এটি একটি ক্লাউড-বেসড, ব্রাউজার নির্ভর স্প্রেডশিট টুল যা সবসময় অনলাইনে কাজ করে।
২. রিয়েল-টাইম কোলাবোরেশন
- Excel: অনলাইন সংস্করণে কোলাবোরেশন সম্ভব, তবে ডেস্কটপ ভার্সনে তা সীমিত।
- Google Sheets: রিয়েল-টাইমে একাধিক ব্যবহারকারী একসাথে একটি শীট এডিট করতে পারে, যা খুব সহজ ও কার্যকর।
৩. অফলাইন অ্যাক্সেস
- Excel: ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে Excel সম্পূর্ণ অফলাইনে কাজ করতে পারে।
- Google Sheets: মূলত অনলাইনে কাজ করে, তবে ডাউনলোড করে Google Drive এর মাধ্যমে সীমিত অফলাইন অ্যাক্সেস সম্ভব।
৪. প্রাইসিং
- Excel: Excel ব্যবহার করতে হলে Office 365 সাবস্ক্রিপশন বা এককালীন Microsoft Office কিনতে হয়।
- Google Sheets: Google Sheets ফ্রি, শুধুমাত্র একটি Google অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন। তবে Google Workspace-এর প্রিমিয়াম ফিচারগুলোর জন্য পেইড সাবস্ক্রিপশন রয়েছে।
৫. ফিচার এবং ফাংশন
- Excel: উন্নত ডেটা ম্যানেজমেন্ট, ম্যাক্রো (VBA) সাপোর্ট, এবং বেশি সংখ্যক ফাংশন সমৃদ্ধ। জটিল হিসাব ও বিশ্লেষণে Excel বেশি শক্তিশালী।
- Google Sheets: তুলনামূলকভাবে কিছু কম অ্যাডভান্সড ফিচার আছে, তবে সাধারণ ব্যবহার ও কোলাবোরেশনের জন্য যথেষ্ট কার্যকর। Google Apps Script এর মাধ্যমে অটোমেশন করা যায়।
৬. ফাইল সাইজ এবং পারফরম্যান্স
- Excel: বড় এবং জটিল ডেটাসেট নিয়ে কাজ করার জন্য Excel বেশি উপযোগী। এটি অনেক বেশি ডেটা সহজেই প্রসেস করতে পারে।
- Google Sheets: সাধারণত ৫ মিলিয়ন সেল পর্যন্ত ডেটা হ্যান্ডেল করতে পারে, তবে অনেক বড় ডেটাসেট নিয়ে কাজ করলে ধীরগতির হতে পারে।
৭. ইন্টিগ্রেশন
- Excel: Microsoft এর অন্যান্য প্রোডাক্ট (যেমন Access, Power BI) এবং অনেক তৃতীয় পক্ষের টুলসের সাথে সহজেই ইন্টিগ্রেশন করা যায়।
- Google Sheets: Google Drive, Google Forms, Google Data Studio, এবং অন্যান্য Google Apps এর সাথে সরাসরি ইন্টিগ্রেশন সুবিধা রয়েছে।
৮. অটোমেশন ও ম্যাক্রো
- Excel: Excel-এর ম্যাক্রো (VBA) অটোমেশনের জন্য খুবই শক্তিশালী এবং অ্যাডভান্সড কাজ করার ক্ষমতা রাখে।
- Google Sheets: Google Apps Script ব্যবহার করে অটোমেশন সম্ভব, কিন্তু VBA-এর তুলনায় এটি কিছুটা সীমিত।
৯. শেয়ারিং ও পারমিশন
- Excel: ফাইল শেয়ার করা যায়, তবে রিয়েল-টাইম কোলাবোরেশন সীমিত। শেয়ার করতে চাইলে OneDrive বা SharePoint-এর মাধ্যমে করতে হয়।
- Google Sheets: খুব সহজেই Google Drive এর মাধ্যমে রিয়েল-টাইম শেয়ারিং ও পারমিশন কন্ট্রোল করা যায়। বিভিন্ন পারমিশন যেমন View, Edit, Comment দেওয়া যায়।
১০. ডেটা এনালাইসিস ও ভিজ্যুয়ালাইজেশন
- Excel: Pivot Tables, Power Query, এবং Power Pivot-এর মতো উন্নত ডেটা এনালাইসিস টুলস Excel-কে ডেটা বিশ্লেষণের জন্য বেশি কার্যকরী করে তোলে।
- Google Sheets: Google Sheets-এ সাধারণ পিভট টেবিল এবং চার্ট আছে, কিন্তু Excel-এর মত উন্নত নয়।
সংক্ষেপে:
- Excel: উন্নত ডেটা বিশ্লেষণ, জটিল ডেটাসেট ম্যানেজমেন্ট এবং অটোমেশনের জন্য উপযুক্ত।
- Google Sheets: সহজ কোলাবোরেশন, রিয়েল-টাইম এডিটিং, এবং ক্লাউড-ভিত্তিক কাজের জন্য আদর্শ।
🔺
(ভিডিও)